সাব্বির হোসেন, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ
দুই বাচ্চার জননী মুক্তা বিয়ের দাবিতে প্রমিকের বাড়িতে অনশন করছে টাঙ্গাইল মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়ন বংশীনগর গ্রামে। জানা যায় মুক্তার বাড়ি যশোরে।
প্রায় দেড় বছর পূর্বে বাঁশতৈল ইউনিয়নের বংশীনগর গ্রামের প্রবাসী মোস্তফা আহম্মেদ এর একমাত্র ছেলে বুলবুল আহম্মেদ এর সাথে ঢাকা একই বাসায় ভাড়া থাকা অবস্থায় সম্পর্ক হয়। সম্পর্কটি এক পর্যায় পরকীয়ার মধ্যে চলে গেলে মুক্তার স্বামী নজরুল টের পেয়ে সংসার থেকে মুক্তাকে তাড়িয়ে দেয়। মুক্তা উপায় না পেয়ে বুলবুলের সাথে যোগাযোগ করে চলে আসে বুলবুলদের বাড়ীতে। মুক্তা বুলবুলকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিপত্তি বাঁজে বুলবুলের পরিবারে, বিষযটি এক পর্যায় চলে যায় প্রশাসনের কাছে। বুলবুলদের বাড়ীতে চলে আসে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এবং ছেলে মেয়ে দুজনকেই নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশ ফাঁড়িতে সেখানে বুলবুলের চাচা ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবুল হোসেন মেয়েকে বলে তুমি চলে যাও বাড়ীতে, গিয়ে তোমার স্বামীকে তালাক দিয়ে কাগজ নিয়ে আসো আমরা তোমাকে বাতিজার বৌ হিসাবে মেনে নেব।
সকলের কথা মতো সেদিন মুক্তা চলে গিয়ে তার স্বামী মোঃ নজরুল ইসলামকে শরিয়া মোতাবেক ১৫/০১/২০২২ ইং তারিখে রেজিষ্টারী অফিসে গিয়ে তালাক প্রদান করে, যার রেজিষ্টার নং ডি বই নং ০৫/২২ বালাম নং ৪১২ পৃষ্টা নং ০৬ তারিখ ১৫/০১/২০২২ইং তালাকনামা নোটিশ ফরম অনুযায়ী তার ১ ছেলে বয়স ৯ বছর ১ মেয়ে বয়স ১১ বছর। তালাক প্রদান করে গত ১৩ এপ্রিল চলে আসে বুলবুলের বাড়ীতে, বুলবুল প্রথম তার সাথে দেখো করলেও দ্বিতীয় দিন আত্মগোপনে চলে যায়, সেই থেকে মুক্তা অবস্থান করছে বুলবুলের ঘরের সামনে। বুলবুলের চাচা আবুল হোসেন মেম্বার প্রথম অবস্থায় মেনে নিতে চাইলেও এখন তিনি বাহির থেকে মাস্তান নিয়ে এসে মেয়েটিকে মেরে গুম করার কথা বলছে এমনই অভিযোগ করছে মুক্তা। মেয়েটি আতংকের মধ্যে থেকেও বিয়ের দাবিতে অনঢ় আছে, বিষযটি নিয়ে এলাকায় মীমাংশা করতে বসলেও ছেলে পক্ষের কেউ হাজির হয়না বলে এলাকার লোকজন নিশ্চিত করেছে। এদিকে বুলবুলের বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পরিবারের সকলেই পলাতক রয়েছেন।
বুলবুলের খালুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনাটির সত্যতা স্বীকার করেন এবং বলেন বুলবুল বুঝতে পারেনি, ওর ভুল হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মেয়েটিরও উচিত হয়নি অন্যের সংসার নষ্ট করে এভাবে চলে আসা।
এদিকে বুলবুলের চাচা আবুল মেম্বারকে বারবার কল করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে বাঁশতৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব হেলাল দেওয়ান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি প্রশাসন অবগত হবার পর ছেলের বাড়িতে গিয়ে ছেলে মেয়েকে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসে এবং সেখানে আবুল মেম্বার মেয়েকে বলে তুমি বাসায় গিয়ে তোমার স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে কাগজপত্র নিয়ে আসো এবং তারপর আমরা তোমাকে ভাতিজার বৌ হিসেবে মেনে নেব। আমি আবুল মেম্বারকে বিষয়টি বার বার মীমাংশা করতে বলেছি।
এ ব্যাপারে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির ইনর্চাজ জনাব সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি। ইতিপূর্বে ফাঁড়িতে এই বিষয়টি কিছুটা মীমাংসা করা হয়েছিলো। যেহেতু মেয়েটি আবার আসছে, সেক্ষেত্রে আমাদের হাতে লিখিত কোনো অভিযোগ আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।