নিউজ ডেক্সঃ
ইউনিয়নের চেয়ারম্যান যদি জমি দখল করে, তখন সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়। তেমনি অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী নব্য চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির একাংশ বিতর্কিত সভাপতি আবদুল কাদের সিকদারের বিরুদ্ধে।জানা যায়, তিনি সম্প্রতি উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামের এক অসহায় পরিবারের ২২ শতাংশ জমি রাতের আঁধারে চেয়ারম্যান তার বাহিনী নিয়ে অবৈধভাবে দখল করেছে।ভুক্তভোগীর পরিবার জমির দিকে গেলে তাদের মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখিয়ে আসতে নিষেধ করে। পরে ওই পরিবার আর যেতে সাহস পায় নি বলে জানান ভুক্তভোগীর পরিবার।
ভুক্তভোগী হলেন, উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামের মৃত মোঃ মনির উদ্দিনের ছেলে মোঃ আফজাল হোসেন। আফজাল হোসেনের রয়েছে আরো ২ বোন। আফজাল হোসেনের বাবা মৃত মোঃ মনির উদ্দিন ২০০৬ সালে আফজাল হোসেনকে ১০৪ শতাংশ জমি সাব কাওলা দলিল করে দেন। পরে আফজাল হোসেন তার নামে খারিজও করে ফেলেন। তার মধ্যে থেকে ৫২ দাগে রয়েছে ২২ শতাংশ জমি। ঐ ২২ শতাংশ জমিই চেয়ারম্যান ও তার বাহিনী নিয়ে অবৈধ ভাবে রাতের আঁধারে দখল করেন এবং রাতেই ঘর তুলে ফেলেন বলে জানা যায়।
ভুক্তভোগী আফজাল হোসেন বলেন, আমার বাবা আমাকে ২০০৬ সালে ১০৪ শতাংশ জমি সাব কাওলা করে লিখে দেয়ার পর আমি খারিজ করে ফেলি। পরে আমার এক চাচা আমার বাবাকে ভুল বুঝিয়ে আমার ২ বোনের নামে ঐ জমিই ২০১০ সালে লিখে দেয়। পরে আমার বোনেরা ঐ জমিতে আসতে পারে না বলে আজগানা ইউনিয়নের নব্য চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের সিকদারের নিকট ঐ ২২ শতাংশ জমি ২০১৯ সালে বিক্রি করে দেন। পরে আমার বোনেরা আমার নামে এই জমি নিয়ে টাঙ্গাইল জজ কোর্টে মামলাও করেন। কিন্তু কোন লাভ হয় নাই। কোর্ট সবসময় আমার পক্ষে। কারন আমার জমি বৈধ। চেয়ারম্যান কাদের সিকদার জোর করে তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এই জমিতে আসে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার (৩১ আগষ্ট) দিবাগত রাত ২ টার সময়। পরে ভুক্তভোগীর পরিবার ওই রাতেই ৯৯৯ কল দিলে মির্জাপুর থানায় বলে দেয়ার কথা বলে এবং আশ্বস্ত করেন। পরেও কোন ফল পাওয়া যায় নি বলে জানান ভুক্তভোগী আফজাল হোসেন। পরে তিনি বাঁশতৈল ইউনিয়ন পরিষদের নব্য চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন দেওয়ানের কাছে গেলে তিনি বলেন, জমি দিয়া দাওগা, তোমারে আরো বেশি জমি দলিল করে দেই। পরে নিরুপায় হয়ে শুক্রবার দিন আবার থানায় গিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন আফজাল হোসেন।
ভুক্তভোগী আফজাল হোসেন আরো বলেন, আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই এবং আমি এই জমি দখলবাজ চেয়ারম্যানের হাত থেকে রক্ষা পেতে চাই। আমি আমার সম্পত্তি ফেরত চাই। তাই, সংশ্লিষ্ট যারা আছেন সবাই আমাকে সাহায্য করুন।
স্থানীয় ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তিদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, দিনে দেখলাম খালি জায়গা,পরের দিন দেখি ঘর। একরাতের ব্যবধানে ঘর উঠে গেল! তারা আরো বলেন, এই জমি আফজাল হোসেনকে তার বাবা দিয়ে গেছে। সে দরিদ্র বলে তার উপর এরকম অত্যাচার করছে নব্য চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের সিকদার। আরো সে আওয়ামী লীগের নেতা, চেয়ারম্যান। প্রশাসন নাকি তার হাতের মুঠোয়।
স্থানীয় জালাল উদ্দীন ও মোতালেব মিয়া বলেন, এই জমি আফজাল হোসেনের। অবৈধ ভাবে ক্ষমতার জোরে চেয়ারম্যান দখল করেছে। সে একজন দখলবাজ চেয়ারম্যান, ভুমি খেকু চেয়ারম্যান।
নব্য চেয়ারম্যান ও অভিযুক্ত আব্দুল কাদের সিকদার বলেন, জমি আমার। আমি দিনের বেলাতেই ঘর তুলেছি।
স্থানীয় চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন দেওয়ান বলেন, বিষয়টি জানি। দেখি কি করা যায়।
মির্জাপুর থানার এসআই মিনহাজ উদ্দিন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তার ভিত্তিতে উক্ত জমি পরিদর্শন করেছি। পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।