আজ রবিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২১ খ্রি, তারিখে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ওয়েবেনার জুমে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জানিপপ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও অনুষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। ড. কলিমউল্লাহ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। এছাড়াও তিনি দেশের সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা সুচারুরূপে বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ গঠন করেন। তাঁর প্রণীত পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা একটি সদ্য স্বাধীন দেশের অর্থনীতির ভিত্তিকে মজবুত করেছে।
আজকের আলোচনায় দিনাজপুর থেকে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন গোলাম মুর্শেদ। তিনি বঙ্গবন্ধুসহ সকল শহীদের আত্নার মাগফেরাত কামনা করার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর সকল খুনীদের বিচার দাবি করেন।
শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষ্যে ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম জুমে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপন করেন কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমানের পুত্র ও চলচ্চিত্র পরিচালক জাঁ-নেসার ওসমান। তিনি বলেন, বাঙালী জাতিকে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও সক্রিয় । ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান ঐ সময় দেশ ত্যাগ করেন। তৎকালীন সময় বৃহৎ পরিসরে আন্দোলন গড়ে না ওঠাতে ঘাতকদল বাঙালী জাতিকে অনেক দিন ধরে শাসন করে যাচ্ছিলো যা ছিলো আমাদের জন্য অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়।
আজকের আলোচনা সভায় ভারত থেকে বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন বিশিষ্ট কলামিস্ট ও গবেষক পিনাকী ভট্টাচার্য। তিনি বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। জনাব ভট্টাচার্য জানিপপ-এর মাসব্যাপী অনুষ্ঠানকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু গত ৮০ বছরে আমার দেখায় ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র উপহার দেয়ার ক্ষেত্রে অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
আজকের আলোচনা সভায় মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপন করেন রয়েল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান জনাব দিপু সিদ্দিক। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ব্যক্তিত্ব ও সাহসে ছিলেন অতুলনীয়। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ কোন রাজনৈতিক ব্লকের পক্ষে নয় বরং এ দেশের অবস্থান শোষিতের পক্ষে থাকবে। ফলে, বৈশ্বিক পরিমন্ডলে তিনি হয়ে উঠেছেন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী নেতা। তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ সামনে অগ্রসর হচ্ছে।
চাঁদপুর থেকে সংযুক্ত হয়ে মোঃ মাসুদ আলম মিল্টন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে বাঙালী জাতি বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু মার্শাল ল’ প্রত্যাহার, সামরিক বাহিনীকে ব্যারাকে পাঠানো ও গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে দেয়ার উধাত্ত আহবান জানান। পরবর্তীকে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাঁড়া দিয়ে বীর বাঙালী দেশকে স্বাধীন করে। জানিপপ ন্যাশনাল ভলেনটিয়ার ও সাংবাদিক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মনজুরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অবদান অপরিসীম। তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
আজকের আলোচনায় বক্তব্য উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক জনাব দেওয়ান নুসরাত জাহান। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু পরিবারের অবদান তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে ৪৬৭৫ দিন কারাভোগ করেছেন যা তাঁর পরিবারের জন্য ছিলো অত্যন্ত বেদনার ও প্রতিকূল বিষয়। তারপরেও বাঙালী জাতিকে স্বাধীনতা এনে দেয়ার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সহযোগিতা ছিলো অপরিমেয়।
জানিপপ ন্যাশনাল ভলেনটিয়ার, লেখক, ও গবেষক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বঙ্গবন্ধুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি ভাবনা নিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। জনাব রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যম ঘোষণা করেন। তিনি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশে এনে জাতীয় কবির মর্যাদায় অভিষিক্ত করেন। সাহিত্য ও সংস্কৃতির মান বাড়ানোর জন্য তিনি বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী ও চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।
এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন জানিপপ ন্যাশনাল ভলেনটিয়ার ও কুমিল্লা আতাকরা কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রভাষক মোঃ কামাল উদ্দিন।